লাটশাল চরের বদলে যাওয়া
দেশের সর্ববৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপ যখন থেকে এই এলাকায় তিস্তা সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করা শুরু করেছে তখন থেকেই এই দুর্গম এলাকা হয়ে উঠেছে আধুনিক
তিস্তার পারে গাইবান্ধার লাটশাল চর। রংপুর শহর থেকে এই এলাকা ৬০ কিলোমিটার দূরে। কিছুটা দুর্গম এলাকায় অবস্থিত এই লাটশাল চর।
দেশের অন্যান্য চর এলাকার সাথে এই চরের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে গত পাঁচ বছরে। পাঁচ বছর আগে এই চর বাংলাদেশের অন্যান্য চরের মতই ছিল। বর্ষায় পানিতে ডুবে থাকতো আর গ্রীষ্মে সাদা বালুর আস্তরণে ভরে থাকতো। গবাদি পশুর জন্য ঘাস পাওয়া যেত না। ছিলনা কোন ভালো রাস্তা অথবা বসবাসের উপযোগী কোন পরিবেশ। মানুষের আনাগোনা ও ছিল না।
এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। দেশের সর্ববৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপ যখন থেকে এই এলাকায় তিস্তা সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করা শুরু করেছে তখন থেকেই এই দুর্গম এলাকা হয়ে উঠেছে আধুনিক।
লাটশাল চরে এখন রয়েছে পাকা রাস্তা, এসেছে বিদ্যুৎ গড়ে উঠেছে থিম পার্ক এবং আধুনিক ভবন।
দেশের সর্ববৃহৎ শিল্প-গোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপ এই এলাকায় বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলছে। এখানে বিনিয়োগ করেছে তিন হাজার কোটি টাকা। রংপুর গাইবান্ধা এবং কুড়িগ্রামের ৬৫০ একর জমিতে এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।
গত বছর আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। যদিও সেই বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
বেক্সিমকো গ্রুপ এই সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হবার পর থেকেই ২০০ মেগাবাইট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে এবং জাতীয় গ্রিলে সরবরাহ করছে। এখন পর্যন্ত এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৪২ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিলের সরবরাহ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বেক্সিমকো গ্রুপ সোলার প্যানেলগুলোর নিচে নানা জাতের কৃষি ফলন শুরু করেছে যার মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা রয়েছে ভুট্টো আলু এবং তরমুজ উৎপাদন করবার। কিছু কিছু ফসল ইতিমধ্যেই উৎপাদন করা শুরু হয়েছে।
আশেপাশের এলাকা, যার মধ্যে কুড়িগ্রাম নীলফামারী লালমনিরহাট এবং গাইবান্ধা অন্যতম, ইতিমধ্যে এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পাওয়া বিদ্যুৎ পাচ্ছে যার ফলে এইসব অঞ্চলে লোডশেডিং এর পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছে।
অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকরা অনুমান করেন যে এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শিল্প-কারখানা আগামী পাঁচ বছরে দ্রুত গতিতে বেড়ে যাবে।