| ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীগণ

March 8, 2017
Image
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীগণ

সালমান এফ রহমান: সালমান এফ রহমান ১৯৬৬ সালে একটি জুট মিল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করেন। পরে এই কোম্পানিটি সরকারীকরণ করা হয়। ১৯৭২ সালে সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে শুধু আমদানি রপ্ততানি করলেও ধীরে ধীরে তিনি শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে শুরু করেন। বর্তমানে বেক্সিমকো গ্রুপের অধীনে ওষুধ, নির্মাণ, সামুদ্রিক খাদ্য,টেক্সটাইল, রিয়েল এস্টেট, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মিডিয়া, সিরামিক ও হসপিটালিটি ব্যবসা রয়েছে। বাংলাদেশের কর্পোরেট কালচার প্রতিষ্ঠায় সালমান এফ রহমানের বিশাল অবদান রয়েছে। বর্তমানে তিনি আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড, জিএমজি এয়ারলাইন্স লিমিটেড এবং আবাহনী লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত আছেন।

শফিউল ইসলাম: শফিউল ইসলামের জন্ম ১৯৪৯ সালে। তিনি দেশের অন্যতম সফল ব্যবসয়ী ব্যক্তিত্ব। তার পেশাদারী জীবন শুরু হয়েছিল ১৯৬৮ সালে, যখন তিনি পারিবারিক ব্যবসায় (ইসলাম গ্রুপ) যোগ দিয়েছিলেন। তিনি অটোমোটিভ ও রিয়াল এস্টেট ব্যবসায় মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। বাড়িয়ে তোলেন নিজের সম্ভাবনাময় প্রতিভাকে। তখন ইসলাম গ্রুপ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। তিনি আফতাব অটোমোবাইলস ও বেঙ্গল উন্নয়ন কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। শফিউল ইসলাম মূলত বেঙ্গল উন্নয়ন কর্পোরেশনের মধ্যপ্রাচ্যের নির্মাণ কাজ দেখাশুনা করতেন। তিনি ইস্টার্ন হাইজিং লিমিটেডও কিনে নেন। ১৯৮০ সালে ইস্টার্ন হাইজিং লিমিটেড ছিল দেশের সবচেয়ে বড় ডেভলপমেন্ট কোম্পানি। ১৯৯৬ সালের পর নাভানা গ্রুপ তৈরি করতে নাভানা লিমিটেড ও আফতাব অটোমোবাইল সৃষ্টি করেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক বজায় রাখেন। তার দূরদর্শীতা সম্পন্ন নেতৃত্বের মাধ্যমে তিনি নাভানা গ্রুপকে দেশের শীর্ষস্থানীয় গ্রুপে পরিণত করেছেন।

আব্দুস সালাম মুর্শেদী: এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাম মুর্শেদী বাংলাদেশের অন্যতম উল্লেখযোগ্য উদ্যোক্তা। বাংলাদেশের শিল্প-কারখানাকে একটি শক্ত ভীত গড়ে দেওয়ার জন্য মুর্শেদী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এই মহান দূরদর্শী ব্যক্তি ১৯৬৩ সালের ৬ অক্টোবর জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ¯œাতক সম্পন্ন করে ১৯৮৪ সালে নিজের ব্যবসা শুরু করেন। মাত্র ২০ বছরের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পপতিতে পরিণত হন। যার বর্তমানে রয়েছে ১৪টি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী ও ওয়াশিং প্লান্ট।এনভয় গ্রুপ এখন কেবল তৈরি পোষাক শিল্পতে সীমাবন্ধ নেই, তথ্যপ্রযুক্তি, কম্পিউটার, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং, মৎস, রিয়েল এস্টেট, ব্যাংকিং, স্বাস্থ্যসহ আরো অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবসা প্রসারিত করেছে। রেডিমেট গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এনভয় গ্রুপকে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ন্যাশনাল এক্সপোর্ট ট্রফি ও প্রেসিডেন্টম এক্সপোর্ট ট্রফি দেওয়ার মধ্য দিয়ে সরকার এনভয় গ্রুপকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অবদার রাখার স্বীকৃতি দিয়েছে। এ সব কিছু সম্ভব হয়েছে একমাত্র সালাম মুর্শেদীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে।গেল দুই দশক ধরে বাংলাদেশ পোষাক তৈরি ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘বিজেএমইএ’এর অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেন সালাম মুর্শেদী। এই সংগঠন ও গার্মেন্টস শিল্পের প্রতি তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের বিষয়টি সহজেই অনুমান করা যায়। কারণ, তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি টানা চারবার বিজেএমইএ এর পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কখনো কখনো ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বিজেএমইএ’ এর প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন। ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিতি ছাড়াও মুর্শেদীরর আরো একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি ছিলেন এক সময়ের মাঠ কাঁপানো ফুটবলার। অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনি বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডানের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। ফুটবল থেকে অবসর নিলেও এখনো তিনি ফুটবলের সংস্পর্শেই আছেন। দেশের অনেক তরুণ ও মেধাবী ফুটবলার উঠে আসার পেছনে তার অবদান রয়েছে। মোহামেডান ক্লাবের উন্নয়নেও তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তরুণ ও মেধাবী খেলোয়াড়দের উঠিয়ে আনার স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের ‘জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার’ পেয়েছেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

মেজর (অব:) আব্দুল মান্নান: মেজর (অব:) আব্দুল মান্নান বাংলাদেশের অন্যতম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তিনি ১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮০ সালে তার ব্যবসায়ী জীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি সানম্যান গ্রুপ ও সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান। মেজর (অব:) মান্নান ইস্টার্ন ইনস্যুরেন্স লিমিটেডেরও অন্যতম ডিরেক্টর। মানুষজন তাকে বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের নেতা হিসেবে চেনে। বাংলাদেশের প্রথম যারা বুঝতে পেরেছিলেন তৈরি পোষাক শিল্প অনেকদূর যেতে পারে তাদের মধ্যে তিনি একজন। সানম্যান গ্রুপের ৪১টি স্বাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং সেগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছে। এই প্রতিষ্ঠানটি রিয়েল এস্টেট, তৈরি পোষাক শিল্প, এভিয়েশন, শিপিং, লিজিং, টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, বেভারেজ, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রক্রীয়াজতকরণ সহ আরো অনেক কিছুর সঙ্গেই সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের বাইরেও মেজর (অব:) আব্দুল মান্নানের শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিশেষ করে কম্বোডিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে। প্রাইভেট হ্যালিকপ্টার সার্ভিসের প্রবর্তক তিনি। মেজর (অব:) মান্নান সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ হিসেবেও পরিচিত। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দেশব্যাপী তিনি বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠা করেছেন।

আব্দুল মতলুব আহমেদ: আব্দুল মতলুব আহমেদ ১৯৫২ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাবসায়ী ব্যক্তিত্ব। তিনি খুবই উচ্চ শিক্ষিত। যক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে তিনি বি.এ ও এম.এ ডিগ্রি লাভ করেছেন। তিনি খুবই সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নিয়েছেন। তার বাবা পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের বিচারক ছিলেন। তার মা ছিলেন উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা। আব্দুল মতলুব চৌধুরী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বহুজাতিক কোম্পানি নিটল-নিলয় গ্রুপের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। তিনি ১৯৮২ সালে নিটল মটরস লিমিটেড প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার ব্যবসায়িক জীবন শুরু করেন।

PREVIOS POST
ব্যবসায়ী নেতারা সিআইপি কার্ড পেলেন
NEXT POST
সফল বনাম অসফল

Related Posts